মানসিক সমস্যা সারা পৃথিবী জুড়ে রয়েছে
“আমি সবসময় একটু হলেও উদ্বিগ্নতার মধ্যে থাকি। এমনকী আমি যখন ঘরে একা বসে থাকি, তখনও আমার মধ্যে এই ধরনের উদ্বিগ্নতা আসতেই থাকে।”
“আমি যখন খুব খুশি থাকি, তখন আমার ভয় লাগে কারণ আমি জানি, এই মুহূর্তে আমি খুশিতে আছি কিন্তু একটু পরেই আমি দুঃখে ডুবে যাব।”
“আমি চেষ্টা করি প্রত্যেক দিন যা ঘটছে, সেটার উপর মনোযোগ দিতে কিন্তু অনেক সময় হঠাৎই বিভিন্ন ধরনের চিন্তা আমার মাথার মধ্যে চলে আসে।”
যে-ব্যক্তিরা মানসিক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে, তারা উপরে উল্লেখিত মন্তব্যগুলো করে থাকে। আপনি অথবা আপনার কোনো প্রিয়জন কি এইরকম সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন?
এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন, আপনি একা লড়াই করছেন না। বর্তমানে অনেকে এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছে, হয় তারা নিজেরা অথবা তাদের কোনো প্রিয়জন।
এতে কোনো সন্দেহ নেই, আমরা “কঠিন ও বিপদজনক” সময়ে বাস করছি, যেটা বিভিন্ন ধরনের দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। (২ তীমথিয় ৩:১) একটা গবেষণা দেখায়, পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৮ জনের মধ্যে ১ জন ব্যক্তি মানসিক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে প্রায় ২৬ শতাংশেরও বেশি লোক উদ্বিগ্নতার শিকার হয়েছে এবং ২৮ শতাংশেরও বেশি লোক গুরুতর অবসাদ ভোগ করছে।
এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, বর্তমানে কত জন ব্যক্তি উদ্বিগ্নতা ও অবসাদের সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। কিন্তু এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল, কীভাবে আপনি ও আপনার প্রিয়জন এই সমস্যার মধ্যেও জীবন কাটাচ্ছেন আর এই বিষয়ে আপনাদের অনুভূতি কেমন?
মানসিক স্বাস্থ্য কী?
উত্তম মানসিক স্বাস্থ্য থাকার অর্থ হল, আপনি ভালো আছেন আর সবকিছু ঠিকমতো করতে পারছেন। আপনি সাধারণ চাপের মোকাবিলা করতে পারছেন, ভালোভাবে কাজ করতে পারছেন এবং জীবনে সন্তুষ্টি অনুভব করতে পারছেন।
মানসিক অসুস্থতা . . .
-
ব্যক্তিগত দুর্বলতার কারণে এটা হয় না।
-
এটা এমন একটা রোগ, যেটা একজন ব্যক্তিকে খুবই কষ্ট দেয়; সেই ব্যক্তির চিন্তাভাবনা, আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও আচার-আচরণের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।
-
এটা বন্ধুত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আর সেইসঙ্গে দৈনন্দিন কাজকর্ম করার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।
-
এটা যেকোনো বয়স, সংস্কৃতি, বংশ, জাতি, ধর্ম, শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা উপার্জন ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রভাবিত করতে পারে।
মানসিক অসুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য
আপনি হয়তো নিজের অথবা আপনার কোনো প্রিয়জনের মধ্যে গুরুতর কিছু পরিবর্তন লক্ষ করেন, যেমন, ঘুমে ব্যাঘাত, খাওয়া-দাওয়ার ধরন, দীর্ঘস্থায়ী কষ্ট, দুশ্চিন্তা কিংবা বিষণ্ণতা। আপনার আসলে কী হয়েছে আর কীভাবে আপনি সেটা থেকে মুক্ত হতে পারেন, তা জানার জন্য আপনি হয়তো কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য নিতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, সাহায্যের জন্য আপনি কার কাছে যাবেন?
সর্বকালের সবচেয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তি যিশু খ্রিস্ট এই বিষয়ে বলেছিলেন, “সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নেই, কিন্তু অসুস্থ লোকদেরই প্রয়োজন।” (মথি ৯:১২) যে-ব্যক্তিরা এই ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে চলেছে, তারা যদি সঠিক চিকিৎসা ও ওষুধপত্র নেয়, তা হলে তাদের সমস্যা অনেকটা কমে যেতে পারে এবং তারা এক সুখী জীবন কাটাতে পারে। যদি লক্ষণগুলো খুবই গুরুতর কিংবা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা হলে তাদের ক্ষেত্রে বিজ্ঞতার কাজ হল, যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা। a
যদিও বাইবেল চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো বই নয়, কিন্তু এর মধ্যে যে-বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলো আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। আমরা আপনাদের পরবর্তী প্রবন্ধগুলো পড়ে দেখার জন্য সাদরে আমন্ত্রণ জানাই, যেখানে আলোচনা করা হয়েছে, কীভাবে বাইবেল মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
a প্রহরীদুর্গ পত্রিকা আমাদের নির্দিষ্টভাবে বলে না যে, আমরা কোন চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ করব। কোনো চিকিৎসার বিষয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একজন ব্যক্তিকে ভালোভাবে তা পরীক্ষা করে দেখা উচিত।