সত্যের বীজ সুদূর অঞ্চলগুলোতে পৌঁছায়
সত্যের বীজ সুদূর অঞ্চলগুলোতে পৌঁছায়
রাশিয়ার টুভা প্রজাতন্ত্র সাইবেরিয়ার একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত আর এর দক্ষিণ এবং পূর্ব দিকে রয়েছে মঙ্গোলিয়া। টুভার অনেক লোকই সুদূর এলাকাগুলোতে বাস করে, যেখানে রাজ্যের বার্তা নিয়ে পৌঁছানো খুবই কঠিন। কিন্তু কিছুদিন আগে, টুভার বেশ কয়েকটা দূরবর্তী এলাকা থেকে একদল লোক একটা সেমিনারে যোগ দেওয়ার জন্য এর রাজধানী কিজিলের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। মারিয়া নামে কিজিলের একজন অগ্রগামী তাদের আসার বিষয়টা জানতে পারেন আর তাই তিনি উপলব্ধি করেন যে, তাদের কাছে সুসমাচার জানানোর জন্য এটা তাকে এক দুর্লভ সুযোগ এনে দিয়েছে।
কী হয়েছিল মারিয়া তা এভাবে বর্ণনা করেন: “যে-স্কুলে আমি একজন শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করি, সেই স্কুলে নেশাকর দ্রব্যের অপব্যবহারের চিকিৎসার বিষয়ে একটা সেমিনারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। টুভার সুদূরতম অঞ্চলগুলো থেকে প্রায় ৫০ জন লোকের সেখানে যোগদান করার কথা ছিল। সেই দলের অন্তর্ভুক্ত ছিল শিক্ষক-শিক্ষিকা, মনোবিজ্ঞানী, শিশু কল্যাণ পরিদর্শক এবং প্রমুখ ব্যক্তি।” মারিয়ার কাছে এই সভা একদিকে যেমন এক সুযোগ ছিল, তেমনই অন্যদিকে তা ছিল এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা স্বরূপ। তিনি ব্যাখ্যা করেন: “আমি লাজুক স্বভাবের আর তাই রীতিবহির্ভূতভাবে সাক্ষ্য দেওয়া আমার কাছে খুব কঠিন বলে মনে হয়। কিন্তু, আমি সাহসের জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম, যাতে আমি আমার ভয়কে কাটিয়ে উঠতে এবং সাক্ষ্য দেওয়ার এই সুযোগকে ব্যবহার করতে পারি।” তিনি কি সফল হয়েছিলেন?
মারিয়া বলে চলেন: “আমি একটি সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকা খুঁজে পেয়েছিলাম, যেটি মানসিক ভীতি সম্বন্ধে আলোচনা করেছিল। আমি ভেবেছিলাম যে, ‘একজন মনোবিজ্ঞানী হয়তো এই প্রবন্ধটি পড়ে দেখতে চাইবেন,’ তাই আমি পত্রিকাটি সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেই দিন, সেমিনারে যোগদানকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একজন আমার অফিসে এসেছিলেন আর আমি তাকে পত্রিকাটি দিয়েছিলাম। তিনি আনন্দের সঙ্গে সেটি গ্রহণ করেছিলেন। বস্তুতপক্ষে, তিনি বলেছিলেন যে, তার নিজেরই একটা মানসিক ভীতি রয়েছে। পরের দিন, আমি তার জন্য যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য—যে-উত্তরগুলো কাজ করে (ইংরেজি) বইটির প্রথম খণ্ড নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি সেটিও আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন। তার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ফলে আমি ভেবেছিলাম যে, অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারাও হয়তো সেই প্রকাশনাটির প্রতি আগ্রহী হবে। তাই আমি এক বাক্স-ভরতি যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য বই এবং অন্যান্য প্রকাশনা সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলাম।” শীঘ্র বাক্সটা খালি হয়ে গিয়েছিল। মারিয়া স্মরণ করে বলেন যে, কী হয়েছিল: “যে-শিক্ষিকাকে আমি যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য বইটি দিয়েছিলাম, তার কয়েক জন সহকর্মী আমার অফিসে এসে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তারা কোথায় ওই বইগুলো বিতরণ করছে?’” তারা একেবারে সঠিক জায়গাতেই চলে এসেছিল!
সেমিনারের শেষ দিন ছিল শনিবার। সেই দিনটা ছিল মারিয়ার ছুটির দিন, তাই তিনি তার অফিসের কয়েকটা টেবিলে সাহিত্যাদি রেখে দিয়েছিলেন। একটা বোর্ডে তিনি লিখেছিলেন: “প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ! আপনারা নিজেদের জন্য এবং আপনাদের পরিচিতদের জন্য সাহিত্যাদি নিতে পারেন। এই চমৎকার প্রকাশনাগুলো আপনাদেরকে আপনাদের কাজে সফল হতে সাহায্য করবে এবং আপনাদের পরিবারকে শক্তিশালী করবে।” কীরকম প্রতিক্রিয়া ছিল? “সেই দিন আমি আমার অফিসে গিয়ে দেখেছিলাম যে, প্রায় সব সাহিত্য ফুরিয়ে গিয়েছে। শীঘ্র আমি নতুন করে বই এবং পত্রিকা সরবরাহ করেছিলাম।” সেমিনারের শেষে, মারিয়া ৩৮০টি পত্রিকা, ১৭৩টি বই ও ৩৪টি ব্রোশার অর্পণ করেছিলেন। সেমিনারে যোগদানকারীরা যখন সেই বিচ্ছিন্ন অঞ্চলগুলোতে ফিরে গিয়েছিল যেখানে তারা থাকত ও কাজ করত, তখন তারা তাদের সঙ্গে করে সাহিত্যগুলোও নিয়ে গিয়েছিল। মারিয়া বলেন, “আমি খুবই খুশি যে, সত্যের বীজ এখন টুভার সুদূরতম এলাকাগুলোতে পৌঁছেছে!”—উপ. ১১:৬.
[৩২ পৃষ্ঠার মানচিত্র]
(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)
রাশিয়া
টুভা প্রজাতন্ত্র