সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

একজন ন্যায়বিচার প্রেমিক

একজন ন্যায়বিচার প্রেমিক

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

একজন ন্যায়বিচার প্রেমিক

ইব্রীয় ১০:২৬-৩১

 আপনি কি কখনো কোনো অবিচার অথবা নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন, সম্ভবত এমন কারোর দ্বারা, যাকে হয়তো সেই কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়নি আর যিনি হয়তো এর জন্য কোনোরকম অনুশোচনা দেখাননি? মোকাবিলা করার জন্য এইরকম চরম অবিচারের চেয়ে আরও কঠিন বিষয় খুব কমই থাকতে পারে, বিশেষ করে সেই আঘাত যদি আপনি এমন কারো কাছ থেকে পেয়ে থাকেন, যার কাছ থেকে আপনি ভালোবাসা ও যত্ন আশা করেন। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, ‘কেন ঈশ্বর এইরকম বিষয়গুলো ঘটতে দেন?’ * প্রকৃত বিষয়টা হল, যিহোবা ঈশ্বর সমস্ত ধরনের অবিচার ঘৃণা করেন। তাঁর বাক্য বাইবেল আমাদের আশ্বাস দেয়, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন যে-ব্যক্তিরা পাপ করেই চলে, তারা ঐশিক শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না। আসুন আমরা ইব্রীয় ১০:২৬-৩১ পদে লিপিবদ্ধ প্রেরিত পৌলের কথাগুলো বিবেচনা করি।

পৌল লেখেন: “সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পাইলে পর যদি আমরা স্বেচ্ছাপূর্ব্বক পাপ করি, তবে পাপার্থক আর কোন যজ্ঞ অবশিষ্ট থাকে না।” (২৬ পদ) যে-ব্যক্তিরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে, তারা সবচেয়ে নিন্দনীয়। কেন? প্রথমত, তারা ক্ষণিকের দুর্বলতাবশত না জেনেশুনে কোনো পাপ করে না—যেধরনের ভুল আমরা সকলেই আমাদের অসিদ্ধতার কারণে মাঝে মাঝে করে থাকি। তারা পাপ করেই চলে। দ্বিতীয়ত, তাদের পাপ হল পরিকল্পিত। দ্যা বাইবেল ইন বেসিক ইংলিশ যেমন বলে, তারা “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মন্দ কাজ করে।” দীর্ঘদিন ধরে পাপ করে চলার ফলে মন্দতা তাদের ব্যক্তিত্বের অংশ হয়ে উঠেছে। তৃতীয়ত, তাদের পাপ তাদের অজ্ঞানতার ফল নয়। ঈশ্বরের ইচ্ছা ও পথ সম্বন্ধে তাদের “সত্যের তত্ত্বজ্ঞান” রয়েছে।

অনুতাপহীন, বিদ্বেষপরায়ণ পাপীদেরকে ঈশ্বর কোন দৃষ্টিতে দেখেন? “পাপার্থক আর কোন যজ্ঞ অবশিষ্ট থাকে না,” পৌল বলেন। খ্রিস্টের বলিদান—মানবজাতির উদ্দেশে দেওয়া ঈশ্বরের উপহার—আমাদের অসিদ্ধতার ফলে করা পাপকে আচ্ছাদিত করে। (১ যোহন ২:১, ২) কিন্তু, যারা অনুতাপহীনভাবে পাপ করেই চলে, তারা দেখায় যে এই মূল্যবান উপহারের প্রতি তাদের কোনো উপলব্ধিই নেই। ঈশ্বরের দৃষ্টিতে, তারা “ঈশ্বরের পুত্ত্রকে পদতলে দলিত করিয়াছে” এবং যিশুর ‘রক্তকে সামান্য জ্ঞান করিয়াছে।’ (২৯ পদ) তাদের জীবনযাপনের মাধ্যমে তারা যিশুর প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে এবং তাঁর রক্তকে “তুচ্ছ” বলে গণ্য করে, যেন কোনো অসিদ্ধ মানুষের রক্তের মতোই এর কোনো মূল্যই নেই। (বাংলা ইজি-টু-রিড ভারসন) এই ধরনের অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিরা খ্রিস্টের বলিদান থেকে কোনোমতেই উপকার লাভ করবে না।

দুষ্টরা কী আশা করতে পারে? ন্যায়বিচারের ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছেন: “প্রতিশোধ দেওয়া আমারই কর্ম্ম, আমিই প্রতিফল দিব।” (৩০ পদ) যারা অন্যদের ক্ষতি করার দ্বারা একগুঁয়েভাবে পাপ কাজ করে চলে, তারা সাবধান হোক। ঈশ্বরের ধার্মিক আইনগুলোকে অবজ্ঞা করে কেউই রেহাই পেতে পারে না। প্রায়ই, তারা তাদের নিজেদের পাপের ফল পেয়ে থাকে। (গালাতীয় ৬:৭) এমনকী এখন যদি তারা তা না-ও পায়, তবুও নিকট ভবিষ্যতে ঈশ্বর যখন এই পৃথিবীকে সমস্ত অবিচার থেকে মুক্ত করবেন, তখন তাদেরকে তাঁর সামনে দাঁড়াতে হবে। (হিতোপদেশ ২:২১, ২২) পৌল সতর্ক করেন: “জীবন্ত ঈশ্বরের হস্তে পতিত হওয়া ভয়ানক বিষয়।”—৩১ পদ।

যিহোবা ঈশ্বর যে ইচ্ছাকৃত পাপকে ক্ষমা করেন না, এটা জানা সান্ত্বনাদায়ক ও সেইসঙ্গে আশ্বাসজনক আর তা বিশেষভাবে সেই ব্যক্তিদের জন্য, যারা একজন নির্মম অন্যায়কারীর কাছ থেকে আঘাত পেয়েছে। আমরা অন্যায়ের প্রতিশোধ নেওয়ার বিষয়টা আস্থার সঙ্গে পুরোপুরিভাবে ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দিতে পারি, যিনি সমস্ত ধরনের অবিচার ঘৃণা করেন। (w০৮ ১১/১)

[পাদটীকা]

^ কেন ঈশ্বর দুঃখকষ্ট থাকতে দিয়েছেন, সেই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১০৬-১১৪ পৃষ্ঠা দেখুন।