উপদেশক ৯:১-১৮
৯ তাই, আমি এই সমস্ত কিছু নিয়ে চিন্তা করলাম আর এই উপসংহারে পৌঁছোলাম যে, সঠিক কাজ করে এমন লোকেরা, বিজ্ঞ লোকেরা এবং তাদের উভয়ের কাজ সত্য ঈশ্বরের হাতে রয়েছে। মানুষ এই বিষয়টা জানে না যে, তাদের জন্মের আগে কতটা প্রেম ও ঘৃণা ছিল।
২ সবার শেষফল* একই হয়, তা তারা সঠিক কাজ করুক কিংবা মন্দ কাজ, তারা ভালো ও শুচি হোক কিংবা অশুচি কিংবা তারা বলিদান উৎসর্গ করুক বা না করুক। যে ভালো এবং যে পাপী, তারা দু-জনেই সমান। যে চিন্তাভাবনা না করে শপথ করে এবং যে ভেবে-চিন্তে শপথ করে, তারা দু-জনেই সমান।
৩ সূর্যের নীচে এই দুঃখজনক বিষয় ঘটে: যেহেতু সবার শেষফল* একই, তাই মানুষের হৃদয়ও মন্দতায় পরিপূর্ণ। সারাজীবন তাদের হৃদয়ের মধ্যে পাগলামি থাকে আর তারপর তারা মারা যায়!
৪ জীবিত লোকদের আশা রয়েছে কারণ মৃত সিংহের চেয়ে জীবিত কুকুর ভালো।
৫ জীবিত লোকেরা জানে যে, তারা মারা যাবে, কিন্তু মৃতেরা কিছুই জানে না এবং তারা আর কোনো পুরস্কারও* পায় না কারণ লোকে তাদের বিষয়ে ভুলে গিয়েছে।
৬ এ ছাড়া, তাদের প্রেম, তাদের ঘৃণা এবং তাদের ঈর্ষা বিনষ্ট হয়ে গিয়েছে আর সূর্যের নীচে যা-কিছু করা হয়, সেগুলোতে তাদের আর কোনো অধিকার নেই।
৭ যাও, আনন্দের সঙ্গে তোমার খাবার খাও আর আনন্দপূর্ণ হৃদয়ে তোমার দ্রাক্ষারস* পান করো কারণ সত্য ঈশ্বর তোমার কাজে খুশি হয়েছেন।
৮ তোমার পোশাক যেন সবসময় সাদা* থাকে আর তোমার মাথায় তেল দিতে ভুলো না।
৯ ঈশ্বর সূর্যের নীচে তোমাকে যে-সংক্ষিপ্ত* জীবন দিয়েছেন, সেই সংক্ষিপ্ত* জীবনের সমস্ত দিন তোমার প্রিয় স্ত্রীর সঙ্গে জীবন উপভোগ করো কারণ জীবনে এটাই তোমার অংশ আর সূর্যের নীচে তুমি যে-কঠোর পরিশ্রম কর, সেটার পুরস্কার।
১০ তুমি যা-ই কর না কেন, তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে করো কারণ তুমি যেখানে যাচ্ছ, সেই কবরে* কোনো কাজ কিংবা পরিকল্পনা কিংবা জ্ঞান কিংবা প্রজ্ঞা, কিছুই নেই।
১১ সূর্যের নীচে আমি দেখেছি যে, যারা দ্রুত দৌড়োয়, তারা সবসময় দৌড় প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় না কিংবা যারা বীরযোদ্ধা, তারা সবসময় যুদ্ধে জয়ী হয় না কিংবা যারা বিজ্ঞ, তাদের কাছে সবসময় খাবার থাকে না কিংবা যারা বুদ্ধিমান, তাদের কাছে সবসময় ধনসম্পদ থাকে না কিংবা যারা জ্ঞানী, তারা সবসময় সফল হয় না। কারণ সবাই বিপদের সময়ের মধ্য দিয়ে যায় আর সবার প্রতিই দুর্ঘটনা* ঘটে।
১২ মানুষ জানে না, কখন তার সময় আসবে। ঠিক যেভাবে হঠাৎই মাছ জালে ধরা পড়ে এবং পাখি ফাঁদে আটকে পড়ে, সেভাবেই মানুষের উপর হঠাৎ বিপদের* সময় এসে পড়ে আর সে ফেঁসে যায়।
১৩ আমি সূর্যের নীচে প্রজ্ঞা সম্বন্ধে আরেকটা বিষয় লক্ষ করেছি আর এটা আমার উপর ছাপ ফেলেছে:
১৪ একটা ছোটো নগর ছিল, যেখানে অল্প কয়েক জন লোক ছিল। একজন শক্তিশালী রাজা এসে সেটা অবরোধ করলেন এবং সেটার চারিপাশে বড়ো প্রাচীর নির্মাণ করলেন।
১৫ সেই নগরে এক গরিব অথচ বিজ্ঞ ব্যক্তি ছিল আর সে নিজের প্রজ্ঞার দ্বারা নগরটা রক্ষা করল। কিন্তু, কেউ সেই গরিব ব্যক্তিকে মনে রাখল না।
১৬ তখন আমি নিজেকে বললাম: ‘শক্তির চেয়ে প্রজ্ঞা আরও ভালো, কিন্তু গরিব ব্যক্তির প্রজ্ঞাকে তুচ্ছ বলে মনে করা হয় আর কেউ তার কথা শোনে না।’
১৭ যে মূর্খদের উপর রাজত্ব করে, তার চিৎকার শোনার চেয়ে, বিজ্ঞ ব্যক্তির শান্তভাবে বলা কথা শোনা ভালো।
১৮ যুদ্ধের অস্ত্রের চেয়ে প্রজ্ঞা ভালো, কিন্তু অনেক ভালো বিষয় নষ্ট করার জন্য কেবল এক জন পাপীই যথেষ্ট।
পাদটীকাগুলো
^ বা “পরিণতি।”
^ বা “পরিণতি।”
^ বা “মজুরিও।”
^ বা “ওয়াইন।”
^ অর্থাৎ উজ্জ্বল পোশাক, যেটা শোকের নয় বরং খুশির মেজাজের ইঙ্গিত দেয়।
^ বা “যে-বৃথা।”
^ বা “বৃথা।”
^ ইব্রীয়, শিওল। শব্দকোষ দেখুন।
^ বা “অপ্রত্যাশিত ঘটনা।”
^ বা “বিপর্যয়ের।”